|
ওড়িষ্যার পটে অঙ্কিত বুদ্ধ |
পূর্বে
মনে করা হত পট চিত্র শুধুমাত্র বাংলার নিজস্ব চিত্রসম্পদ। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে পট চিত্র সর্ব ভারতীয় লোকশিল্প।বাংলার গ্রাম জনপদে
শহরে যেমন এর অনুশীলন এবং
আদর লক্ষ করা যায়। তেমনি বাংলার সংলগ্ন উড়িষ্যা ,আসাম্,বিহার প্রভৃতি রাজ্যে সূদুর গুজরাট ,উত্তরপ্রদেশ অন্ধ্রপ্রদেশ্,রাজস্থান প্রভৃতি অন্য রাজ্যেও এর
প্রচলন লক্ষ করা যায়। পট পাওয়া গেছে রাজস্থানের
যোধপুর,জয়পুর,উদয়পুর থেকে মহারাষ্ট্রর পৈথান, ওয়ারঙ্গল নলগোন্ডা থেকে , দক্ষিণের তাঞ্জোর ও উড়িষ্যার
বিভিন্ন জেলা থেকে।এমনকি কয়েকটি স্থানের পট অতুলনীয় ঔজ্বল্যে ভরা। যেমন নাথ দ্বারের পারজী কা-প-ড় ,গুজরাট-রাজস্থানের জৈন
পট গুলি।অনুসন্ধানের ফলে বহু আঞ্চলিক পট-নিদর্শন হাতে এসছে সেগুলি কাপড়ে আঁকা । যথেষ্ট গুরুত্ত্ব দেওয়া হত
বলেই স্থায়ীকরণের উদ্দেশ্যে এবং জনসমখ্যে
প্রদর্শিত হ্ত বলে কাপড়ে আঁকা হত
সেগুলো। প্রাচীন ভারতের হিন্দু,জৈন,বৌদ্ধ
গন ধর্মপ্রচার নীতিশিক্ষা ও চিত্ত বিনোদনের
জন্য ব্যপক পট চিত্র ব্যবহার করতেন। অবশ্য
নাম ও রচনা শৈলীতে মিল ও অমিল দুই
লক্ষনীয় এবং আশ্চর্য্যের ব্যাপার সব রাজ্যের
পটুয়ারা বিশ্বাস করেন যে তারা দেব শিল্পী বিশ্বকর্মার সন্তান।বাংলার পটুয়ারা যেমন এই মিথে বিশ্বাসী ,তেমনী সূদুর অন্ধ্র
প্রভৃতি রাজ্যের পটুয়ারাও এতে বিশ্বাসী।বাংলার
সংলগ্ন উড়িষ্যার পটুয়ারাও এই মিথে অবিশ্বাসী হবেন
এমন কোন সম্ভাবনা নেই।
|
অন্ধ্রপ্রদেশের পটচিত্র |
উড়িষ্যা
বাংলা সংলগ্ন রাজ্য বলেই সর্বাগ্রে সেখানে
পটের প্রচলন সম্পর্কে তথ্যাদি
অনুসন্ধান বিশেষ জরুরী। উড়িষ্যা বাংলা
সংলগ্ন রাজ্য হওয়ায়
এখানে পটচিত্র শিল্পের দ্বারা ব্যাপক পটচিত্রের
চর্চা ও মিল অপ্রাত্যাশিত বা অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। কারণ বাংলা ও উড়িষ্যার
মানুষের নৃতাত্ত্বিক মিল বা সমগোত্রিয়তা লক্ষ করা যায়। মন্দিরময় উড়িষ্যার মন্দিরে মন্দিরে বিশেষত জগন্নাথ মন্দিরে পটচিত্র বিক্রয় এর প্রথা অনুসৃত হওয়া স্বাভাবিক।উড়িষ্যার
রাজধানী ভুবনেশ্বরে অবস্থিত “ভুবনেশ্বর মিউজিয়ামে” এ প্রাচীন চিত্রাবলীর মধ্যে রক্ষিত আছে মোটা কাপড় এর উপর অঙ্কিত
দুটি জড়ানো পটচিত্র। রামায়নের কাহিনী উপজীব্য বলে সেগুলিকে রামায়্নী পট বলতে কোথাও
বাধা নেই আর ব্স্ত্র খন্ড অর্থাৎ পট্ট এর উপর অঙ্কিত বলে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে সে সময়ে পট আঁকা হত বস্ত্রখন্ডের উপর সে সময় কোন এক পট শিল্পী লীলায়িত তুলির স্পর্শে
এগুলি করেছেন।অর্থাৎ এগুলি সুপ্রাচীন সৃষ্টি,পট শিল্পী স্বয়ং কিংবা অন্য কোন ব্যক্তি ওই দু খানি জরানো পটের নিচেই পটের বিষয়বস্তু
লিখে দিয়েছেন ওড়িয়া ও তেলেগু ভাষায়। ফলে পট
চিত্রদ্বয় সম্পূর্ণ্য দূর্বোধ্য ঠেকে না।
|
ওড়িষ্যার পট |
No comments:
Post a Comment